লালমোহন (ভোলা) সংবাদদাতা :
দ্বীপ জেলা ভোলার লালমোহন উপজেলার লর্ডহার্ডিঞ্জ ইউনিয়নের মেঘনা নদীর মাঝে জেগে উঠা বিচ্ছিন্ন শত বছরের চর সৈয়দপুর’র ৪৪৩ জন বৈধ (কাগজপত্রধারী) নিরীহ ও গরীব কার্ড ধারী চাষার দখলীয় জমি ভুমিদস্যুরা জবর দখলের পায়তারা করে আসছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। বৈধকার্ড ধারী শতাধিক ভূমি মালিকরা জানান,গত কিছুদিন আগ থেকে লর্ডহার্ডিঞ্জ মৌজা জে এল নম্বর – ৫০ চর সৈয়দপুর চরের উত্তর মাথা মনপুরা থানার হাফেজ রহিম,নুরুদ্দিন টিপু, ঠিকাদার আলাউদ্দিন,আলমগীর মাঝি সহ একটি ভুমিদস্যু গ্রুপ জমির মালিকানা বিহীন লালমোহনের প্রকৃত মালিকদের জমিতে মাঝে মাঝে এসে চর সৈয়দপুরে হানাদেয়।এবং ধানের মৌসুমে রোপন করা পাকা ধান সন্ত্রাসী ও ভূমিদস্যুবাহিনী নিয়ে এসে অবৈধ ভাবে কেটে নিয়ে যায়। গত মৌসুমে মনপুরার উল্লেখিত ভুমিদস্যুরা চরে এসে জমি চাষের ট্রাক্টর ও ধান কাটার মেশিন নিয়ে যায়।তাদের বিরুদ্ধে জমির বৈধকাগজপত্রধারী মালিক মোঃ আক্তার হোসেন লালমোহন থানায় একটি সাধারন ডায়রি করেন যার ডায়রি নম্বর – ১০৪৬ তারিখ ২৫-১০-২০২৪ এবং জমির আরেক মালিক নির্মল কৃষ্ণ পাল লালমোহন থানায় আরেকটি সাধারণ ডায়রি করেন যার নম্বর ৯৭২ তারিখ ১৯-৭-২০২৫ বাদীরা উল্লেখ করেন যে তাদের জমি উক্ত ব্যক্তিরা ট্রলার যোগে হটাৎ করে এসে জমি চাষাবাদ করার চেষ্টা করে পরে তাদেরকে বাঁধা প্রদান করে তাদের কাগজ পত্র নিয়ে বসার তারিখ দিলে তারা আর আসেনা। ভূমি মালীকরা জানায় ,চরসৈয়দপুরে প্রায় দুই হাজার একর জমি রয়েছে, জমিগুলো আমাদের লালমোহন উপজেলার আওতাধীন। আমাদের দাবী উক্ত জমিগুলো যেন সাবেক মন্ত্রী বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মেজর অবঃ হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বীরবিক্রমের সুদৃষ্টি কামনা করছি, আমাদের লালমোহন উপজেলার ভূমিহীন, নিরীহ ও প্রকৃত কাগজপত্র ধারী ভূমি মালীকদের দখলে বা চাষে কেউ যেন বাঁধা হয়ে না দাঁড়ায়।
অন্যান্য কার্ড ধারী জমির মালিকদের মধ্যে মোঃ কামাল মেম্বার,,রতন মিয়া ,আবদুল আলী, মোঃ সেলিম হাওলাদার,সহ অনেকে জানান,চর সৈয়দপুরের দক্ষিণ মাথায় আমাদের দখলীয় জমি চরফ্যাশন রেঞ্জের আওতাধীন বেতুয়া বন কেন্দ্রেের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ আসাদুজ্জামান মনপুরার মহিষ মালীকদের ( বাতানিয়া দের) নিকট ঘাসের জন্য লগ্নি বাবদ মোটা অংকের টাকা নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন তারা । এখন মহিষের বাতান ঘাস খাওয়ার জন্য ছেড়ে দিয়ে চরের জমি চাষ করতে বাঁধা হয়ে দাড়িছে । ওই জমি বনবিভাগ তাদের নিজস্ব বলে দাবী করে।কিন্তু আমাদের কাগজপত্রের জমিতে তাদের কোন বাগান নেই। যদি বাগাই থাকতো তাহলে মহিষের মালীকদের কাছে ঘাসের জন্য কিভাবে লগ্নি করল? তাদের প্রশ্ন মহিষ কি বাগান নষ্ট করেনা? আমরা আমাদের জমি চাষ করলেই তাদের কেন এত সমস্যা, তারাতো অন্য উপজেলার। তাদের প্রশ্ন আমাদের চরসৈয়দপুরের বৈধ কাগজপত্রকৃত জমিগুলি অন্য উপজেলা থেকে বনবিভাগের লোজন এসে অবৈধ ভাবে মহিষের মালীকদের কাছে ঘাসের জন্য কিভাবে লগ্নি করে। আমরা আমাদের দখলীয় জমির মালীক থাকায় সরকার আমাদের কাছ থেকে খাজনা ও নিয়েছে সেই ডকুমেন্টস আমাদের কাছে আছে । গত কিছুদিন আগে জমির মালিকরা চর সৈয়দপুরে চাষের জন্য একটি পাওয়ার টিলার নিয়ে জমি চাষ শুরু করলে চরফ্যাশন রেঞ্জের আওতাধীন বেতুয়ার বন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ আসাদুজ্জামান স্পিড বোর্ড নিয়ে এসে টিলার ড্রাইভার কমালকে ধরে নিয়ে তার বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে কোর্টে প্রেরণ করেন । বৈধ কাগজপত্র ধারী জমি চাষ করার কারনে কেন টিলার ড্রাইভার কামালকে লালমোহনের সীমানায় এসে অবৈধভাব আটক করেছে তাহা জানতে ও তাকে ছাড়াতে ভূমি মালীকদের পক্ষে তদবির করতে বনবিভাগের বেতুয়ার কর্মকর্তার কাছে চরসৈয়দপুরের বৈধ জমির মালীক ও লালমোহন উপজেলার লর্ড হার্ডিঞ্জ ইউনিয়নের বাসিন্দা সাবেক মেম্বার মোঃ কামাল উদ্দিন বেতুয়ার বন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তার কাছে আসলে তিনি তার কাছে টাকা দাবি করে, সে টাকা দিতে না পারায় তাকেও আসামি করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন চরসৈয়দপুরের ভূমি মালীক মোঃ কামাল উদ্দিন মেম্বার।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত মনপুরার ঠিকাদার মোঃ আলাউদ্দিন বলেন,ওই জমি চর সৈয়দপুরে নয় ওইগুলো চর নজরুল, চর সৈয়দপুর ভিন্ন আরেকটি চর, আমরা চর সৈয়দপুর নিয়ে বিরোধ করিনা, আর ওইটা নিয়ে আদালতে মামলা রয়েছে। আরেক অভিযুক্ত মোঃ নুরউদ্দীন টিপু বলেন,, আমি এক সময় ওই চরে গিয়েছি, আমার এলাকার লোকজনের সাথে, এখন আর আমি যাইনা,,আমি না গেলেও তারা আমাকে আসামি করেছে। চরফ্যাশন রেঞ্জের আওতাধীন বেতুয়ার বন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ আসাদুজ্জামান বলেন, ওই জমি আমাদের বনবিভাগের , আমি যাহা করেছি বৈধভাবে করেছি, তবে টাকা দাবীর বিষয়টি তিনি অস্বীকার করেন।
এ ব্যাপারে লালমোহন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ শাহ আজিজ বলেন, উক্ত বিষয়ে কেউ যদি আমাদের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করে তাহলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।